

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে শিকড়ের কবিদের কবিতায়
স্মরণ, শ্রদ্ধাঞ্জলি

আত্মাহুতি
আতিকা হাসান
প্রতিবার মরার আগে বিস্মিত চোখে তাকিয়ে দেখি রক্তাক্ত ঝরা পালকের ডানা
নিজের আগুনে নিজেই বারবার দেই আত্মাহুতি,
এ যেন আমার নিয়তির লেখা চরম অভিশাপ
যাপিত জীবনে চুয়ানো সহস্র রক্তক্ষরণ।
বায়ান্নের রফিক, শফিক, জব্বারের রক্ত
৭১-এ লাখো মুক্তিসেনার রক্ত
৭৫-এ বত্রিশ নম্বর বাসভবনের দেয়াল,
জানালার কাঁচ, মেঝে ও ছাদে ছড়ানো রক্ত
ভাঙা চশমা, চুরুট, সিঁড়িতে মাখামাখি বঙ্গবন্ধুর শহীদী রক্ত
এখনো লেপ্টে আছে বাংলার বাতাস,
রাজপথ, স্বজনের বুক, শতশত নদনদীর জল।
নির্জন রাতের দেহে হঠাৎ জাগে সেই নিদারুণ ব্যথা
কালের সাক্ষী হয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে শতবর্ষীয় বৃক্ষ
শেকড়ে জমা তারও যে দগদগে ঘা।
বীরাঙ্গনা মায়ের আঁচলে সেলাই করা অতীতের রক্তাক্ত ক্লেদ,
বিমূর্ত জীবনকথা
নামমাত্র অস্তিত্বের প্রতি পদক্ষেপে তার
উদোম লজ্জার সীমাহীন দহন।
এত যে ত্যাগ, এত যে বেদনার স্বাধীনতা
তবুও তপ্ত মরুর বালুকায় মুখ লুকিয়ে রাখি
উটপাখির মত,
গভীর রাতের তামাদি জোসনায়
একাকি নির্জন রাস্তায় অথবা জনসমুদ্রের ভিড়ে
আজও ধর্ষিত হয় আমার স্বাধীনতা
জাতির পিতার আত্মা এখনো অশান্ত, এখনো রক্তাক্ত,
থুবড়ে পড়ে আছে বাংলা মায়ের মেঝেতে।
এই সপ্তাহের কবিতা
আতিকা হাসান
